আকার ও আকৃতিঃ এরা আকারে মাঝারি ধরনের ও অপেক্ষাকৃত লম্বালেজ বিশিষ্ট সাপ। দৈর্ঘে ১০০ থেকে ১৭৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে।মাথা লম্বা ও চ্যাপ্টা এবং মুখের সামনের দিকে চৌকোনা আকৃতির। এদের দেহের রঙ পিঠের দিক সবুজাভ হলুদ বা হালকা সবুজ রঙের এবং কালচে ডোরাযুক্ত হয়ে থাকে। ঘাড় থেকে লেজের ডগা পর্যন্ত মেরুদন্ড বরাবর কমলা রঙের দাগ দেখা যায়। চোখ বড় ও গোলাকার পিউপিলযুক্ত। পৃষ্ঠীয় আঁশগুলো মসৃন ও ভোঁতা ধরনের হয় কিন্তু অঙ্কীয় আঁশগুলো বেশ চোঁখা হয়।
খাদ্যঃ এদের খাদ্য তালিকাতে আছে পোকামাকড় ,টিকটিকি,গিরিগিটি, ব্যাঙ,ছোট পাখি ইত্যাদি । বাস্তুতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে প্রকৃতির এক অসাধারণ ভূমিকা পালন করে কালনাগিনী সাপ ।
প্রজননঃ জুন - জুলাই মাসে এরা ৬-১২ টি ডিম পাড়ে যা থেকে বাচ্চা ফুটে ।
কল্প-কাহিনিঃ কালনাগিনীর ভয়ংকর রুপ আমদের চলচিত্র,লোকগাঁথা, শিল্পসাহিত্য ও ধর্মীও অনুশাসনে দেখতে পাওয়া যায় । এই সাপটিকে আমদের সমাজে এতো ভয়ংকর ও রূপকল্প ভাবে পরিচিত করেছে আমদের বাংলা চলচিত্র। সাপটিকে না চিনলেও এর নামটি সবার কাছে অত্তান্ত পরিচিত । বেহুলা লখিন্দর থেকে শুরু করে কালনাগিনীর প্রেম, নাগ নাগিনী , শীষনাগ, নাগিনী কন্যা, নাগ পূর্ণিমা, নাগরানী, সতী নাগকন্যা,নাগমহল,নাগিনা,নাগজ্যোতি,নাচে নাগিন,রূপসী নাগিন,নাগিনী সাপিনী ইত্যাদি অনেক ছবি বানানো হয়েছে কালনাগিনীর নামে। আমদের সমাজে কালনাগিনী এতটাই ভয়ংকর রূপে চিত্রিত হয়েছে যে আমরা কেউ কারো উপর ক্ষিপ্ত হলে একজন আরেকজনকে কালনাগিনী বলে ডাকি । অথচ কালনাগিনী বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর সাপগুলির মধ্যে অন্যতম একটি সুন্দর সাপ।
আমাদের গ্রামঞ্চলে কালনাগিনীর তীব্র বিষ ও মানুষ মৃত্যু নিয়ে নানান লোকগল্প প্রচলিত আছে।কিন্তু বাস্তবে এরা কিছুটা বিষাক্ত হলেও এদের বিষ মানুষের জন্য তেমন একটা ক্ষতিকর না। এদের বিষের প্রয়োগে আজ প্রজন্ত কোন মানুষ মারা যায় নাই।
জীব বৈচিত্রের এই গুরুত্ত পূর্ণ প্রাণীটি আমদের অজ্ঞতা , কুসঞ্ছকার আর বাংলা চলচিত্রের ভুল ভাবে উপস্থাপন করার কারণে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে আমদের পরিবেশ থেকে । এভাবে চলতে থাকলে আমরা হারাবো আমাদের প্রাণ বৈচিত্র্যকে । তাই জীব বৈচিত্রের এই গুরুত্ত পূর্ণ প্রাণীটিকে টিকিয়ে রাখাতে আমদের সবাইকে সচেতন হওয়া দরকার ।
বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল ১ অনুযায়ী প্রজাতিটি সংরক্ষিত। IUCN এই প্রজাতিটিকে Least concern বা ন্যূনতম বিপদ গ্রস্থ বলে ঘোষণা করেছে।
PC:
১. Prajjwal Ray
২. Rasel Debbarma
৩. Prosenjit Debbarma
তথ্যসূত্রঃ
১. তফসিল
- ১ ( রক্ষিত বন্যপ্রাণী ) উভচর , বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জুলাই
১০,২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, ক্রমিক নং -৩৯, পৃষ্ঠা- ১১৮৪৪৫।
২. Amphibians and Reptiles of Bangladesh - M. Kamrul Hasan , M. Monirul H. Khan , M. Mostafa Feeroz
৩. A Guide To Wildlife - M. Monirul H. Khan
৪. The IUCN Red List of Threatened Species .
২. Amphibians and Reptiles of Bangladesh - M. Kamrul Hasan , M. Monirul H. Khan , M. Mostafa Feeroz
৩. A Guide To Wildlife - M. Monirul H. Khan
৪. The IUCN Red List of Threatened Species .
No comments:
Post a Comment